আমাদের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের মধ্যে যদি কেউ খুবই দুষ্টু ও দুরন্ত হয় তবে তাকে আমরা পাজি, বাচাল ও খাটাশ বলে থাকি এবং সেই সাথে সাথে যারা খু্বই নরম, কথা কমবলে তাদের আমরা ম্যানা, বলদ বলে থাকি। ঠিক তেমনি, ব্র্যান্ডের ব্যাপারটাও কিন্তু অনেকটা একই। টয়োটা গাড়ী শুনলেই আমাদের মাথায় কাজ করে এটার মেইন্টেনেনস খরচ অনেক কম এবং দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যাবে, লেক্সাস বা জাগুয়ার-এর নাম শুনলেই মনে হয় ব্যয়বহুল গাড়ী এবং টাটার নাম শুনলেই মনে হয় কমদামী এবং খুববেশিদিন রাস্তায় চালানো যাবে না । দেশীয় কোম্পানী স্কয়ার গ্রুপ, বেক্সিমকো, এসিআই গ্রুপের পন্যর নাম শুনলেই ভাল বলে সবাই মনে করে । খবরে কাগজ প্রথম আলোর কথা আসলেই মানুষ সংবাদটাকে নির্ভরযোগ্য মনে করে, অন্যান্য ব্র্যান্ড নকিয়া, আইফোন, স্যামসাং, অ্যাপল, কোকাকোলা এবং এলিভেটর ব্র্যান্ড ওটিচ, সিন্ডলার, কোনে, মিৎসুবিসি আরো যত আরো যত নামীদামী ব্র্যান্ড- এরা কি একদিনে এই সাফল্য অর্জন করেছে? নিশ্চয়ই নয়। ব্র্যান্ড বিল্ডিং হুটহাট করে হয় না, ব্র্যান্ডের পরিচিতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে কাস্টমার বন্ডিং-এর জায়গাটা তৈরী হয়।
Table of Contents
আমার মতে ব্যান্ডিং অনেকটাই প্রেমে পড়ার গল্পের মতই ।যদি কোন প্রডাক্ট দেখতে আকর্ষনীয় এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন না হয় তবে তাহা কোনদিনই দীর্ঘস্থায়ীভাবে তাদের ক্রেতাদের মধ্যে কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না । প্রেমে পড়ার জন্য প্রেমিক যেমন নিজেকে যেমন পরিপাটি করে, চুলে জেল দিয়ে, মান্জা মেরে সুন্দরী মেয়ের আশেপাশে ঘুরঘুর করে তার নজরে পড়ার জন্য এবং তাকে ইমপ্রেস করার জন্য, যেকোনো ব্র্যান্ড-এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই – অ্যাডের মাধ্যমে টার্গেট কাস্টমারদের নজরে পড়ার চেষ্টা করাটাই হলো প্রথম ধাপ, দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে ‘প্রাসঙ্গিকতা’ পরিপাটি হয়ে যে ছেলেটি সুন্দরী মেয়ের আশেপাশে ঘুরঘুর করল, কিন্তু সেই সুন্দরীর যদি অলরেডি প্রেমিক থেকে থাকে, তাহলে তো কোন রেজাল্ট আসবে না । সুতারাং, যদি কেউ অন্য একটা ব্র্যান্ডের প্রডাক্ট কোয়ালিটি ও সার্ভিস এর উপর সন্তুষ্ট থাকে, তবে সেই ব্র্যান্ডের কোনো খারাপ কিছু না পেলে (সেই সুন্দরীর বয়ফ্রেন্ডের সাথে বড় কোনো ঝামেলা না হলে) এবং আপনার ব্র্যান্ডের বাড়তি যোগ্যতা (অর্থাৎ, আপনার বাড়তি কোনো আকর্ষনীয় গুন না থাকলে) ‘প্রাসঙ্গিকতা’ শুরুতেই মাঠে মারা যাবে।